
নিজস্ব প্রতিবেদক, উখিয়া, কক্সবাজার।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের উত্তর সোনাইছড়ি গ্রামের আলোচিত হত্যা মামলা কালোটাকাই ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আসামিরা।
জানাযায়, বিশ্ব মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো ও সচেতনতামূলক প্রচারণাকে কেন্দ্র করে জালিয়াপালং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আবছার নান্নু ও ছাত্রশিবিরের চেইন অফ কমান্ড সন্ত্রাসী সংগঠন “সোনাইছড়ি নাইনস্টার এসোসিয়েশন” এর মধ্যে সংগঠিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে গত ৩ই এপ্রিল সোনাইছড়ি নাইনস্টার এসোসিয়েশন , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির ক্যাডার শাহীন সরোয়ার ও কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক শিবির নেতা এসএম সাইফুদ্দিন এর নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন সন্ত্রাসী দেশীয় তৈরি অস্ত্র: রামদা,কিরিচ ,চাপাতি , লাঠি নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে নান্নু দের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে রেজুনদী সাঁতরিয়ে ছাত্রলীগ নেতা নান্নু পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর করতঃ পিতা আলী হোসেন(৫০) ও বড়ভাই আহমদ শরীফ(৩২) কে বেধড়ক মারপিট করে এবং মাতা নুর নাহার বেগম (৪২) কে নির্মমভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে ঘটনাস্থলে হত্যা করে। এদিকে নিহত নুর নাহার বেগমের স্বামী মামলার বাদী আলী হোসাইন বলেছেন, সন্ত্রাসীরা আমার ছেলেকে খুন করতে এসে, তাকে না পেয়ে আমার স্ত্রী কে প্রকাশ্যে দিবালোকে লাঠিসোটার আঘাত সহ লাথি-কিল, ঘুষিতে এলোপাতাড়ি মারধর করার ফলে ঘটনাস্থলেই আমার স্ত্রী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আসামীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকা সত্বেও থানা-পুলিশ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে হত্যা মামলার ধারা (৩০২) সংযুক্ত করার আশ্বাস ও নানা বাহানায় হত্যা মামলার বদলে মারধরের মামলা রুজু করে। আদালতের কার্যক্রম সচল হলে আমি আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন না ধরায় কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
একই সময় ক্ষুব্ধ সন্ত্রাসীরা বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে একই এলাকার জালিয়াপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী বিশিষ্ট সমাজ সেবক উখিয়া উপজেলার স্বনামধন্য ক্রীড়া সংগঠক ও গণপূর্ত বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা জনাব সানাউল্লাহ সাহেব, শামসুল আলম সোহাগ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আলী হোসেন জীবনকে সোনাইছড়ি জামে মসজিদের উঠানে দেখামাত্রই ছাত্রলীগ নেতা নুরুল আবসার নান্নুর সহযোগী সন্দেহে তাদের উপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার জন্য তারা মসজিদের ভিতরে ঢুকলেও টেনেহিঁচড়ে বের করে মারধর করে । খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও তাদের স্বজনেরা এগিয়ে আসলে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ হয় এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা মোহাম্মদ উল্লাহ ও বিশিষ্ট দানবীর হাজি জাফার আলাম কোম্পানিকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরসহ মোহাম্মদ উল্লাহর পায়ের রগ কেটে দেয়, বর্তমানে মোহাম্মদ উল্লাহ চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা যায়।এ ব্যাপারে হাজী জাফর আলম কোম্পানি ও মোহাম্মদ উল্লাহর স্বজনেরা বলেন মসজিদের ভিতর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে মারধর ও এহেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। যত বড় সন্ত্রাসী হোক কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ১৪ জনকে আসামি করে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তারা।
স্থানীয় সচেতন মহল ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘটনাটি সরাসরি হত্যা মামলা রুজু না করে থানার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা আইন ও ন্যায় বিচারে জটিলতা সৃষ্টি করেছেন। কারণ এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনায় স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বরং সরাসরি হত্যা।নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, চোখের সামনে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও অমানুষিক নির্যাতন দেখেও কিছু করতে না পারার কারণ হলো ৫০/৬০ লোকের মধ্যে অন্তত ৩০ জনের হাতে রামদা ও কিরিস ছিল। হত্যামামলা নিশ্চিত করতঃ ধারালো অস্ত্র সমূহ উদ্ধার পূর্বক সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। এছাড়াও এলাকাবাসী বলেন খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে থানার সামনে মানববন্ধন সহ যেকোনো ধরনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে বদ্ধপরিকর।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উখিয়া থানার ও.সি (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, কোন টাকার বিনিময়ে নয়, ভিকটিম নুর নাহার বেগমের ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসা মাত্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।