
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের বিজয়ী হওয়ায় এটাই প্রমাণিত হয় দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রয়েছে এবং গণতন্ত্র শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
বুধবার সকালে তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে রাজশাহী এবং সিলেটের নবনির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরবৃন্দের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলোতে নিজস্ব পছন্দের প্রার্থী, সরকারি এবং বিরোধী দলীয় সদস্যকে অবাধে ভোট দিতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক এলাকার মানুষ অবাধে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীর মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর শপথ বাক্য পাঠ করান।
এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কাউন্সিলরবৃন্দকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জাফর আহমেদ খান শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং রাজশাহী এবং সিলেটের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং ৪০ জন কাউন্সিলর এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং ৩৬ জন কাউন্সিলর চলতি বছরের ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্বাচিত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় ছিল বলেই এই উন্নয়ন সম্ভবপর হয়েছে।’
জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর সরকারের লড়াই-সংগ্রামের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজ জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাঁরা তাদের ইচ্ছেমত প্রার্থীকে নির্বাচিত করার সুযোগ পাচ্ছে।’
একটি দেশের উন্নয়নে দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১০ বছর দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় ছিল বলেই বাংলাদেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধিত করেছে।’
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশে দিন বদলের অঙ্গীকার নিয়েই তাঁর সরকার ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে। আজ আপনারা সেই দিন বদল নিজেরাই দেখতে পাচ্ছেন, জনগণ ক্ষুধা থেকে মুক্তি পেয়েছে।’
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ এবং এই উন্নয়নের ধারাকে টেকসই রূপ দিতে তাঁর সরকার ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্লান-২১০০’ নামে আগামী একশ’ বছরের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সিলেটে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তাঁর সরকারের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তাঁর সরকার কখনই কোন রাজনৈতিক ভিত্তিতে স্থানীয় সরকারের বাজেট বরাদ্দ করে না।’
অতীতে তাঁর সরকার রাজশাহী এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জন্য ব্যাপক বরাদ্দ প্রদান করেছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘কে কোন দলের মেয়র সেটা চিন্তা না করে জনগণের কল্যাণের কথাটাই সরকার আগে চিন্তা করে। ভোট জনগণের সাংবিধানিক অধিকার আর এই সাংবিধানিক অধিকারের যথাযথ প্রয়োগের ওপরই গণতন্ত্র নির্ভরশীল। আর আমরা জনগণের এই অধিকারকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর এবং যেকোন মূল্যেই তাঁদের এই অধিকারকে রক্ষা করা হবে।’
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শুধু নিজেদের সম্পদ গড়ে তোলায় মনোনিবেশ করলেই চলবে না জনগণ কিভাবে সম্পদশালী হতে পারে সে দিকেও লক্ষ্য রেখেই কাজ করতে হবে।’
নবনির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরদের সরকারের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সকল রকমের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে, সরকার কোন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি এবং জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস এবং অসামাজিক কর্মকাণ্ড বরদাশত করবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য।’
সূত্র, বাসস।