
লক্ষ্মীপুর থেকে ভি বি রায় চৌধুরী-
সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কোন্দল চরম আকার ধারন করেছে।একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের তীর ছুড়ে চলেছে। যা এলাকার মানুষের মুখরোচক কাহিনিতে পরিনত হয়েছে। এতে একপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বর্তমান ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন। অন্য পক্ষে আছেন ইউনিয়ন আ’লীগ সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক ও ইউনিয়ন যুবলীগ আহবায়ক জাহাঙ্গীর সহ অন্যরা।
সরজমিনে এলাকা ঘুরে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে ইউনিয়ন আ’লীগের নেতৃত্ব নিয়ে কুশাখালীতে প্রতিযোগিতা চলছে। এই কারনে একপক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে শুধু কাদা ছোড়া-ছুড়িই নয়, দিয়েছেন একে অন্যের বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে নানান রকম অভিযোগ।
কুশাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, গত ইউপি নির্বাচনের পূর্বে ১নং এ মহিন, ৪নং এ রহিম ও ৫নং ওয়ার্ডে কপিল মাঝি’র থেকে ইউপি সদস্য করার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানান রকম দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে ইউনিয়নের অনেকে উপ-পরিচালক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, লক্ষ্মীপুর ও পরিচালক, বিভাগীয় দপ্তর, চট্টগ্রাম বরাবরে অভিযোগ দিয়েছেন।
কুশাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের অন্য সহ-সভাপতি মোশাররফ অভিযোগ করেন নুরুল আমিন সাহেব আমার শান্তির হাট বাজারের পারভীন টের্ড্রাস থেকে রড সিমেন্ট বাবত ৬৭ হাজার বকেয়া টাকা দিচ্ছে না।
ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নুরুল আমিন সাহেব ইটবাটার শ্রমিক থেকে আজ দুর্নীতি ও অনিয়ম করে কোটিপতি হয়েছেন, কিভাবে তিনি এত টাকার মালিক হয়েছেন সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনারা তদন্ত করেন।
সকল অভিযোগের বিষয়ে ১০ ডিসেম্বরে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে কুশাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন। আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষদের আনা সকল অভিযোগ রাজনৈতিক কারনে। এতে ১ নাম্বারে ইউনিয়ন আ’লীগের সহ-সভাপতি ও ভবানীগঞ্জ সোনালী ব্যাংক শাখার ঋন খেলাপি এবং কুমিল্লা বোর্ডের সনদ জালকারী চক্রের হোতা ও এসডিবি এনজিও করে সাধারণ মানুষ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া আব্দুল খালেক, ২ নাম্বারে ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক ও হত্যা মামলার আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং তার ভাই সন্ত্রাসী জসিম, ৩ নাম্বারে ইউনিয়ন আ’মীলীগের সহ-সভাপতি ও জাল দলিল করে স্থানীয় রাবেয়া বেগমের ৮৮ শতাংশ জমি জবর দখলকারী মোশাররফ হোসেন, ৪ নাম্বারে ৫নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও মাদক, নারী সহ বিভিন্ন কারনে দলথেকে বহিস্কৃত শিপন। ৫ নাম্বারে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও একাধিক মামলার আসামি সোহেব হাসনাত মিন্টু, ৬ নাম্বারে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া ও ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য জসিম। এরা সাত/আট জন মিলে আমাকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
নুরুল আমিন আরো বলেন, আমি ৭৮ ‘র দুঃসময়ে মিছিল দিয়ে আওয়ামী রাজনীতিতে আসি, ৮৩ তে সদর থানা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক হই ও একই সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাগিনার গড়া বাংলার বানীতে কাজ করি, ১৯৯৪ সনে কুশাখালী ইউনিয়ন আ’লীগের কাউন্সিলে সম্পাদক হই, ২০০৩ সনে কাউন্সিলের মাধ্যমে ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হই। আমাদের ঠিকাদারী, ইট,মুদি সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা আছে। আমি রাজনীতি করতে গিয়ে প্রায় দুইশত শতাংশ জমি বিক্রি করি। এখন পর্যন্ত সকলের দোয়ায় বঙ্গবন্ধুর গড়া বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জন্য কুশাখালী ইউনিয়নে শেখহাসিনার নির্দেশমত দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে চলেছি। আমার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে প্রতিপক্ষের সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে।